রবি. মে ৫, ২০২৪
চাঞ্চল্যকর সব মামলার তদন্ত করার বিষয়ে শক্তি অর্জন করেছে পিবিআই।
সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী-চাঁদপুর,
বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটন করতে অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থাগুলো যেখানে হাল ছেড়ে দেয়, সেখান থেকেই কাজ শুরু করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। যাত্রার পর থেকে বিভিন্ন মামলার রহস্যজট উন্মোচন করে বার বার আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে সংস্থাটির নাম। যেসব মামলার কোন ধরণের সূত্রই থাকে না, অর্থাৎ ক্লু-লেস অনেক মামলার তদন্তেও সাফল্য দেখিয়েছে পিবিআই।
পথচলা খুব বেশি সময় ধরে না হলেও পিবিআই পরিণত হয়েছে আস্থার প্রতীক হিসেবে। সম্প্রতি পিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া, কর্মকৌশল, সাফল্য ও নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন সংস্থাটির চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তফা কামাল রাশেদ।
২০২২ সালের ২০ শে ডিসেম্বর পিবিআই চাঁদপুর জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে
দায়িত্ব নেন পুলিশের এই মানবিক কর্মকর্তা। তিনি ২৫ তম বিসিএস এ ২০০৬ সালের ২১ আগষ্ট পুলিশে যোগদান করেন। পরবর্তীতে
সুনামগঞ্জের এএসপি হেডকোয়ার্টার, এস এস এফ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগে এসি ট্রাফিক , ২০১৫ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে পিবিআই হেডকোয়ার্টারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইবার ক্রাইম এন্ড ফরেনসিক হিসেবে সৎ ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
কথায় কাজের বলিষ্টতায় মানুষের মধ্যে আজীবন স্মরনীয় হয়ে থাকবেন তিনি, তৃপ্তির গর্বিত আওয়াজ তাকে নিয়ে অনেকের মাঝে। সেবার এক অনন্য আইকন হয়ে দাড়িয়েছেন তিনি। চাঁদপুরে কর্মক্ষেত্রে যোগদানের পর জয় করে নিয়েছেন মানুষের মন।
চাঁদপুর পিবিআই এ একাধিক মামলা চলমান পরিবারের লোকজন জানান, তিনি সাধারণ মানুষের কথা মন দিয়ে শোনেন। চাঁদপুরে যোগদানের পর কোনো টাকা-পয়সা লেনদেন ছাড়াই মানুষ নিরন্তর সেবা পাচ্ছেন। বদলে গেছে পিবিআই চাঁদপুরের পুলিশের চিত্র। পাল্টে গেছে সেবার ধরন। বদলে গেছে পুলিশের আচরণ।
তিনি চাঁদপুরে যোগদানের পর তার সফলতা এবং কর্মদক্ষতায় মতলব দক্ষিণ থানার দেলোয়ার হোসেন মিলন হত্যা মামলার প্রধান আসামি নূরনবী ও সিফাতকে কুমিল্লা থেকে , শাহারাস্তি উপজেলার পোড়া মাসুদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আলমগীরকে কুমিল্লা ও আরেক আলমগীর হোসেনকে লক্ষ্মীপুর থেকে , মতলব উত্তর থানার নোয়াখালীর পলি আক্তার হত্যা মামলার মূল আসামি হান্নান মুন্সিকে হত্যাকাণ্ডের পাচ দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে, হাজীগঞ্জে কামরুল হত্যা মামলার প্রধান আসামী দীর্ঘদিনের পলাতক সুজনকে ৭ বছর পর হাজীগঞ্জ থেকে, ফরিদগঞ্জ থানার ডাকাতি মামলার আসামি শুভ এবং স্বপনকে ঢাকা থেকে আটক করতে সক্ষম হয়েছেন। এছাড়াও তার নেতৃত্বে বেশ কয়েক‌টি বড় অ‌ভিযান সফল ভাবে প‌রিচালিত হয়েছে।
পিবিআই চাঁদপুর পুলিশ সুপার  মোঃ মোস্তফা কামাল রাশেদ বলেন, আমাদের কাছে যখন একটি হত্যা মামলা আসে, তখন প্রথমে সেটিকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা হয়। এমনিতেই মামলার তদন্ত ছাড়া আমাদের অন্য কোনো কাজ নেই। তাই মামলার জট নিরসন করতে পারি আর না পারি, প্রতিটি মামলা আমরা খুব দায়িত্ব সহকারেই তদন্ত করি। তবে পিবিআই না পারলে ধরে নিতে হবে, আর কেউ পারবে না। সুতরাং পিবিআই’ই শেষ ভরসা। আর সেই মোতাবেক পিবিআই শেষ চেষ্টা দেখানোর জন্য সর্বাত্মকভাবে কাজ করে।
এভাবেই মামলার তদন্ত করতে করতে, চাঞ্চল্যকর সব মামলার তদন্ত করার বিষয়ে শক্তি অর্জন করেছে পিবিআই। এই অভিজ্ঞতা এখন সব মামলার ক্ষেত্রেই আমাদের
কাজে লাগে।
তিনি বলেন, পিবিআই যাত্রা শুরুর দিকে ছোট ছোট কিছু মামলার তদন্ত করত। কিন্তু ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি বিধি তৈরি হওয়ার পর ধীরে ধীরে সকল সিডিউলভুক্ত মামলার তদন্ত শুরু করে পিবিআই। সারা দেশে এখন পিবিআই’র ৫০টি ইউনিট কাজ করছে। একেবারে গ্রামগঞ্জে গিয়ে আমরা তদন্ত করে মামলার জট নিরসন করছি। নিঃসন্দেহে অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থাগুলোর থেকে পিবিআই আলাদা। সেটা কাজের ধরন, কৌশল ও সাফল্যে। পিবিআই এখন এমন একটি সংস্থায় রূপ নিয়েছে যেখানে অফিসার থেকে শুরু করে একজন কনস্টেবল পর্যন্ত সবাই ২৪ ঘণ্টা তদন্ত কাজে নিজেদের ব্যস্ত রাখেন। কেননা নির্দিষ্ট সময় পর পর মামলার অগ্রগতির বিষয়ে জবাবদিহিতা করতে হয়। সকল পক্ষের কথা শুনে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য পুলিশ রিপোর্ট দিতে পিবিআই কাজ করে।
পুলিশ জনগনের বন্ধু, অপরাধীরা যাতে অপরাধ করে পার পেয়ে যেতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি নির্যাতিত মানুষ যাতে পুলিশের নিকট এসে ভাল ব্যবহার ও আইনের মাধ্যমে সুবিচার পায় সেই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে পুলিশ রিপোর্ট দিতে হবে। পিবিআই সদস্যদের যাতে সুনাম বৃদ্ধি পায় সে লক্ষ্য নিয়ে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান তিনি। মনে রাখবেন পুলিশ শুধু জনগণের বন্ধুই না সেবক। সততা, নিষ্ঠা, পরিশ্রমই সাফল্যের পথ দেখায়। পুলিশ সব সময়ই জনগণের পাশে ছিল এবং আগামীতেও থাকবে। এজন্য চাঁদপুরবাসীসহ সর্বমহলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।

উল্লেখ্য: মোঃ মোস্তফা কামাল রাশেদ সদা হাস্যোজ্জল দক্ষতাসম্পন্ন চৌকশ একজন সরকারি কর্মকর্তা, তিনি দক্ষতা দিয়ে কর্মকাণ্ডকে যেমনি সচল রেখেছেন তেমনি আন্তরিকতা দিয়ে সহকর্মীদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। তিনি একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও বিচক্ষণ সরকারি কর্মকতা। কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের কারণে তিনি সকলের নিকট প্রশংসিত।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *