সোম. এপ্রি ২৯, ২০২৪

বাগেরহাট প্রতিনিধি,
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ জনপ্রিয় এই গানের মধ্য দিয়ে এখনো বেঁচে আছেন মানুষের মাঝে। শুধু গানই নয়, কবিতার মধ্য দিয়েও তিনি ফুটিয়ে তুলেছিলেন মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন ও সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার চিত্রও। অকাল প্রায়ত এই কবির ৬৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার মিঠাখালীতে কবির গ্রামের বাড়িতে কবির নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুল চত্বরে পালিত হয় নানা কর্মসূচি। সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে রুদ্র স্মৃতি সংসদের উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি মাহমুদ হাসান ছোট মনির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস ইনিষ্টিটিউটের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। বক্তব্য রাখেন আমাদের গ্রামের পরিচালক রেজা সেলিম, এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহিম ও মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ।
রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও রুদ্রের অনুজ সাংবাদিক সুমেল সারাফাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জন্মবার্ষিকীতে আলোচনা, স্মৃতিচারণ সভা শেষে রুদ্রের গান, কবিতা, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। সকালে বের হয় জন্মবার্ষিকীর শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রা শেষে কবির কবরে ফুল দেন বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ।
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশালের রেডক্রস হাসপাতালে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। বাংলাদেশের কবিতায় অবিস্মরণীয় এ কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম কবি-স্বীকৃতি। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান। কবি তার কাব্যযাত্রায় যুগপৎ ধারণ করেছেন দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি ততধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেন— ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাঁকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীকে’। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তরজুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা। দেশ ও জাতির সংকটে রুদ্রের কবিতা হয়ে
উঠেছে তারুণ্যের হাতিয়ার। মাত্র ৩৫ বছরের স্বল্পায়ু নিয়ে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং অর্ধশতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। তিনি
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রæত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন।##mn

 

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *