মঙ্গল. এপ্রি ৩০, ২০২৪

বাগেরহাট প্রতিনিধি,

তাপদাহ ও লোডশেডিং এ অতিষ্ট জনজীবন বাগেরহাটে হাতপাখা ও হারিকেনের দোকানে বেচাকেনা ধুম

সারা দেশের ন্যায় তীব্র তাপদাহে ওষ্ঠাগত বাগেরহাট জেলাবাসীর প্রাণ। মরার ওপর খাড়ার ঘায়ের মতো এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং। একদিকে গরমে ফ্যান বন্ধ, অন্যদিকে রাতে অন্ধকার। সব মিলিয়ে হাতপাখা ও হারিকেনের দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে জেলার মানুষ। মঙ্গলবার বাগেরহাট জেলায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে মোংলা আবহাওয়া অফিস। এর আগে সোমবার জেলার তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী সাতদিন এমন তাপদাহ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবে বৃষ্টি হলে জেলার তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছেন মোংলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ মো. হারুন অর রশিদ।
এদিকে, তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে জেলার সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত ও সঙ্গে লোডশেডিং থাকায় ভোগান্তির মাত্রা দ্বিগুণ হয়েছে। বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষেরা। তীব্র গরম ও রোদের তাপে কৃষক, দিনমজুর, রিকশাচালকরা কাজ করতে পারছেন না। তবে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের ফলে বেচাকেনা বেড়েছে হাতপাখা ও হারিকেনের দোকানগুলোতে। জেলার হারিকেন, কুপি ও হাতপাখার দোকানগুলোতে মানুষের ভীড় লক্ষ্য করার মতো।
বাগেরহাট শহরের রিকশাচলক করিম শেখ বলেন, ‘তীব্র গরমে ঘরে-বাইরে কোথাও শান্তি নেই। রিকশার হ্যান্ডেলের সাথে ছাতা বেঁধে কোনোমতে সূর্যের তাপ থেকে বাঁচার চেষ্টা করছি। কিন্তু গরম কি আটকানো যায়!।
‘পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হতে বাধ্য হয়েছি। কারণ একদিন ইনকাম না হলে পরেরদিন আমাকে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।’
শহরের দক্ষিণ সরুই এলাকার বাসিন্দা আলম শেখ বলেন, ‘এত গরম আমার জীবনে দেখিনি। সে সঙ্গে কষ্ট আরও বাড়িয়েছে লোডশেডিং। ঘরে ও রাস্তায় কোথায়ও দাঁড়াতে পারছি না। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চারবার গোসল করেছি। তাতেও শান্তি পাচ্ছি না।’
বাগেরহাট শহরের নাগের বাজার এলাকার ব্যবসায়ী দিপক সাহা বলেন, ‘গরম ও লোডশেডিংয়ে আমরাও কষ্টে আছি। তবে হাতপাখা ও হারিকেনের চাহিদা অভাবনীয় হারে বেড়েছে। আগে যেখানে দিনে এক থেকে দুটি হাতপাখা, হারিকেন ও চেরাগ (কুপি) বিক্রি হয়েছে, সেখানে দিনে ১০ থেকে ১৫টি হারিকেন ও চেরাগ বিক্রি হচ্ছে।’
নাগেরবাজার এলাকার হাতপাখা দোকানী লক্ষ্মী রানী সাহা বলেন, ‘গত কয়েক বছরে হাতপাখার এমন চাহিদা দেখিনি। আমার দোকানে যত হাতপাখা ছিল সব বিক্রি হয়ে গেছে। নতুন করে হাতপাখার অর্ডার দিয়েছি। বেচাকেনা অনেক ভালো।’##mn

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *