প্রতিনিধি বাগেরহাট :
সুন্দরবনের দুবলারচরের বঙ্গোপসাগরে পূণ্যস্নানের মধ্যদিয়ে শেষ হলো ৩’দিনের রাস উৎসব অনুষ্ঠিত।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) ভোরে সুর্য ওঠার আগেই বঙ্গোপসাগরের নোনা জলে পাপ মোচনের আশায় স্নান করেন অসংখ্য তীর্থযাত্রী।
এর আগে রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার দুবলার আলোরকোলের অস্থায়ী মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় রাস পূজার নানা আনুষ্ঠানিকতা। রোববার শুরু হওয়া এ রাস উৎসব শেষ হয় মঙ্গলবার প্রত্যুষে স্নানের মধ্যদিয়ে। স্নান শেষে তীর্থযাত্রীরা যে যার মতো করে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরতে শুরু করে।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বী অন্যতম রাস উৎসব।
প্রায় শত বছর ধরে প্রতি কার্তিক মাসের ভরা পূর্ণিমার তিথিতে এ রাস উৎসব হয়ে আসছে দুবলার চরে। তবে করোনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত কয়েক বছর ধরে শুধু রাসের পূজা ও স্নান হচ্ছে, বন্ধ রয়েছে মেলার আয়োজন। এবারও তাই হয়েছে।
সনাতন ধর্ম মতে, রাস হল জীবাত্মার সাথে পরমাত্মার মিলন। রাস যাত্রা সনাতন ধর্মালম্বীদের একটি বাৎসরিক উৎসব। কার্তিক মাসের পূর্ণিমাই রাসপূর্ণিমা। রাস মূলতঃ শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় অনুষ্ঠিত ধর্মীয় উৎসব। ভগবান কৃষ্ণের রসপূর্ণ অর্থাৎ তাত্ত্বিক রসের সমৃদ্ধ কথাবস্তুকে রাসযাত্রার মাধ্যমে জীবাত্মার থেকে পরমাত্মায়, দৈনন্দিন জীবনের সুখানুভূতিকে আধ্যাত্মিকতায় এবং কামপ্রবৃত্তিসমূহকে প্রেমাত্মক প্রকৃতিতে রূপ প্রদান করে অঙ্কন করা হয়েছে।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, এই দিন বৃন্দাবনের গোপিনী সকাশে রাধার সঙ্গে রাস উৎসবে মেতেছিলেন গোপশ্রেষ্ঠ শ্রীকৃষ্ণ। গোপিনীদের নাচ ও শ্রীকৃষ্ণের সুমধুর বংশীধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠেছিল বৃন্দাবনের পবিত্রভূমি। পরবর্তীকালে শ্রীরাধা ও শ্রীকৃষ্ণের এই মিলন উৎসবকে শ্রীচৈতন্যদেব নাম-সঙ্কীর্তনের মধ্য দিয়ে রাস মহোৎসবে পরিণত করেন। rj