জরুরী মুহুর্তের জন্য সাড়ে ৬শ মেট্রিকটন চাল মজুদ রয়েছে, বাগেরহাট পৌরসভাসহ নি¤œাঞ্চল প্লাবিত, পানিবন্দী সাড়ে ৭ হাজার পরিবার,
প্রতিনিধি বাগেরহাট।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপে কারনে ভারী বৃষ্টিপাতে বাগেরহাট পৌরসভাসহ জেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পরেছে সাড়ে ৭ হাজার পরিবার। ভেসে গেছে ১ হাজার ৫শ চিংড়ি ঘের ও পুকুর। একটানা ভারী বৃষ্টিপাতেও জেলার সকল নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবী পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তারা বলছে পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে জেলার সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছিলো যেটি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। এ কারনে ভারী বৃষ্টিপাত হলেও নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক রয়েছে। আর বৃষ্টিতে জেলার কৃষিখাতে কোন ক্ষতি হয়নি বলে দাবী করছে কৃষিবিভাগ। তারা বলছে এমন বৃষ্টি পাতে সকল ধনের ধান চাষে কৃষক উপকৃত হয়েছে। আর আবহওয়া অফিস বলছে গত ২৪ ঘন্টায় বাগেরহাট জেলায় ১৬৫ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এ বছর সর্বচ্ছ বৃষ্টিপাত বলছে মোংলা আবহওয়া অফিস।
এদিকে সোমবার (৭ আগষ্ট) ভোর রাত থেকে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি পাতে বাগেরহাট পৌরসভার অধিকাংশ সড়কও পানিতে ডুবে গেছে। শহরের খারদ্বার, বাসাবাটি, সাধনার মোড়, রাহাতের মোড়, নাগেরবাজার,দড়াটানা
মুনিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ও আশপাশের বাড়িগুলোর বাসিন্দারা পানিবন্দী হয়ে পরেছেন। এছাড়া জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল, বাগেরহাট সদর ও মোংলা উপজেলার অধিকাংশ নি¤œাঞ্চল বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
বাগেরহাট পৌরসভার খারদ্বার এলাকার বাসিন্দা তাসলিমা বেগম বলেন, আমরা গত ১৫দিন ধরে পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছি। আমাদের এলাকায় পানি উঠলে আর নামে না। আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি।
একই এলাকার মিশু পাইক বলেন, এমন এলাকায় বসবাস করি ভাই। বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ঘরের মধ্যে হাটু পানি, রান্না-বান্না বন্ধ। পানি নামছে না, আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি।
মোংলা আবহওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হারুন আর রশিদ বলেন, বঙ্গোপসাগর সৃষ্ট নি¤œচাপের প্রভাবে বাগেরহাট জেলা জুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত অভ্যাহত রয়েছে। জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ১৬৫ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এ বছরের সর্বচ্ছ বৃষ্টিপাত। আগামী ৪৮ ঘন্টা এমন অবস্থায় বিরাজ করবে। একারনে মোংলা বন্দরকে তিন নম্বার স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাস বলেন, এখন আমন ধানের মৌসুম শুরু হয়েছে। জেলার কৃষকরা এখন বীজতলা তৈরী করতে শুরু করেছে। এ সময় এমন বৃষ্টি পানির লবনাক্তা কমে যাবে, যার ফলে ধানের জন্য খুব উপকার হবে।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল বলেন, বাগেরহাট জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৬৭ হাজার চিংড়ি ঘের রয়েছে। গত দু’দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে ১৫শ চিংড়ি ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে। তবে চিংড়ি ঘের ও পুকুরের পানি ছুই ছুই অবস্থায় রয়েছে। বৃষ্টিপাত অভ্যাহত থাকলে আরও চিংড়ি ঘের ও পুকুর ভেসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, বাগেরহাট জেলা জুড়ে গত দু’দিনে ভারী বৃষ্টিপাত হলেও বর্তমানে পূর্নিমার জোয়ারের পানির কোন প্রভাব না থাকায় জেলার সকল নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। এর ফলে জেলার নি¤œাঞ্চল গুলো প্লাবিত হলেও পানি নামতে শুরু করেছে।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ খালিদ হোসেন বলেন, দু’দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে জেলার অধিকাংশ নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে এ পর্যন্ত সাড়ে ৭ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পরেছে প্রাথমিক তথ্য পেয়েছি। এছাড়া প্রায় ১৫শ চিংড়ি ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে। জেলার সকল উপজেলার নির্বাহী অফিসারদের ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জরুরী মুহুর্তের জন্য সাড়ে ৬শ মেট্রিকটন চাল মজুদ রয়েছে।##mn
অর্থনীতি
আলোচিত
কৃষি ভাবনা
খুলনা বিভাগ
জাতীয়
ফিচার
বাগেরহাট
বিশেষ সংবাদ
শিরোনাম
সারাবাংলা
স্বাস্থ্য