বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
পূণ্য স্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হল সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলের রাস উৎসব। কোন রকম আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান ছাড়া পূজা-ধর্মীয় আরাধনা ও দুবলার চরে পূণ্য স্নানের মধ্য দিয়ে এবারের রাস পূজা শেষ হয়েছে। আজ সোমবার (৩০ নভেম্বর) ভোরে সমুদ্র তীরে প্রার্থনা ও স্নান করে হিন্দু ধর্মালম্বীরা নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন।এর আগে রবিবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দুবলার চরের মন্দিরে সন্ধ্যা পূজার মধ্য দিয়ে ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব শুরু হয়।
রাস উৎসব শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয়ভাব ধারায় অনুষ্ঠিত ধর্মীয় উৎসব। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রসপূর্ণ অর্থাৎ তাত্বিক রসের সমৃদ্ধ কথা বস্তুকে রাসযাত্রার মাধ্যমে জীবাত্মার থেকে পরমাত্মায় রুপান্তরিত করতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এ উৎসব পালন করে। বাগেরহাটের মোংলা থেকে নদীপথে বঙ্গোপসাগর পাড়ের সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে ২ শত বছর ধরে এ উৎসব পালন হচ্ছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা বঙ্গোপসাগরের চর আলোরকোল এলাকায় বসে পূর্ণিমার জোয়ারে স্নান করে, যাতে তাদের সকল পাপ মোচন হয়ে যায়। হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণের হাজার হাজার মানুষ এ উৎসবে হাজির হয়।প্রতিবছর এই উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সুন্দরবনে রাস উৎসব হয়নি। আর করোনার কারণে এ বছর রাস উৎসবে কোন মেলার আয়োজন করা হয়নি। প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত ছিল শুধু হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য।এবার সব মিলিয়ে মাত্র তিন সহস্রাধিক সনাতন ধর্মালম্বী এবারের রাস উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন।রাস উৎসব বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন জানান, করোনা সংক্রমণ এড়াতে এবার খুবই স্বল্প পরিসরে রাস উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। এ বছর সকলের সহযোগিতায় আমরা সুষ্ঠভাবে এই উৎসব সম্পূর্ণ করেছি। কোন সমস্যা হয়নি।পৃথিবী থেকে করোনা বিদায় নিলে আগামী বছর পূর্বের মত জাকজমকপূর্ণভাবে রাস উৎসবের আয়োজনের কথা ব্যক্ত করেন তিনি।