বৃহঃ. মে ১৬, ২০২৪

 

প্রতিনিধি বাগেরহাট।

দক্ষিনাঞ্চলের বৃহত্তম এই মৎস্য আড়ত বাগেরহাটের কেবি বাজারে ইলিশের দাম চড়া, হতাশা ক্রেতারা,

মা ইলিশ রক্ষায় আবারও ২২দিন অবরোধের কবলে পড়ছেন জেলেরা। এই সময়ে সমুদ্র ও নদীতে  ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকবে। শুক্রবার (০৭ অক্টোবর) প্রথম প্রহর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। এই হিসেবে আজই ইলিশ বিক্রি ও ক্রয়ের শেষ দিন। শেষ দিনে ইলিশ কিনতে বাগেরহাটের একমাত্র সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র কেবি বাজারে ভীড় জমিয়েছেন ভোক্তারা। দাম চড়া হওয়ায় হতাশায় ক্রেতারা।

বৃহস্পতিবার (০৬ অক্টোবর) কাক ডাকা ভোর থেকেই ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয় কেবি বাজারে। ফজরের নামাজ শেষে মুহুর্তের মধ্যে ক্রেতা-বিক্রেতার হাক ডাকে সরগরম হয়ে ওঠে দক্ষিনাঞ্চলের বৃহত্তম এই মৎস্য আড়ত। অন্যান্য সময়ের থেকে খুচরো ক্রেতাদের যেমন ভীড় ছিল, তেমনি মাছের দাম ছিল অনেক বেশি। প্রতি কেজি মাছ অন্যান্য দিনের তুলনায় ১‘শ থেকে ৩‘শ টাকা বেশি বিক্রি হয়েছে। এক কেজি থেকে ১২‘শ গ্রাম মাছ ১৫ থেকে ১৬‘শ টাকা কেজি, ৮‘শ থেকে ৯‘শ গ্রামের ১২‘শ টাকা, আধা কেজি থেকে ৬‘শ-৭‘শ গ্রাম টাকা, ৩‘শ থেকে সাড়ে আধা কেজির নিচের মাছ বিক্রি হয়েছে ৭‘শ থেকে ৮‘শ টাকা কেজিতে। সর্বশেষ ২‘শ গ্রাম ও তার নিচের মাছ বিক্রি হয়েছে সাড়ে চারশ থেকে ৫‘শ টাকা কেজিতে। যা অন্যান্য সময় বিক্রি হত ২‘শ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। শুধু ইলিশ নয় অন্যান্য মাছের দামও ছিল সাধারণ ক্রেতাদের বাজেটের থেকে বেশি। ঢেলা চেলা, চাপিলা, তুলার ডাটি, রুপচাঁদা, কঙ্কন, মেদ, মোচন গাগড়া, সাগরের বাইলা, লইট্টাসহ সব ধরণের মাছ বিক্রি হয়েছে বেশি দামে। সাগরে কাঙ্খিত মাছ না পাওয়া, ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় মাছের পরিমান কম হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে দাবি ট্রলার মালিকদের।

ট্রলার মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, কাল থেকে সাগরে অবরোধ শুরু। এবার তেমন মাছও পাইনি। যা পাইছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বেশি দামে বিক্রির পরেও ঠিকঠাক খরচ উঠবে কিনা বলা যাচ্ছে না।

সাগর থেকে ফেরা জেলে রফিকুল আমানি বলেন, সাগরে যাওয়ার পর থেকে কয়েকবার ঝড়ের কবলে পড়ে জাল ফেলতে পারিনি। তারপরও যে কয়বার ফেলেছি তেমন মাছ পাইনি। আবার কাল থেকে ২ে২ দিনের অবরোধ, এই ভাবেই চলে আমাদের। মাছ ক্রেতা জহিরুল ইসলাম  বলেন, মাইকিংয়ের মাধ্যমে শুনেছি কাল থেকে ইলিশ বিক্রয় বন্ধ। তাই ভোরেই আসছি মাছ কিনতে। ভেবেছিলাম দাম কম হবে। কিন্তু খুচরো বাজারের থেকে দাম অনেক বেশি।

সিরাজুল ইসলাম নামের এক পাইকারি ক্রেতা বলেন, সপ্তাহে দুই-তিন দিন এখান থেকে মাছ কিনে কচুয়া, বাধাল, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন স্থানে খুচরো বিক্রি করি। আজকে যে দামে মাছ কিনলাম তাতে খুচরো খরিদদারদের কাছে বেচতে খুব কষ্ট হবে।

আব্দুর রশীদ নামের এক ক্রেতা বলেন, কেবি বাজারে আগেও বেশ কয়েকবার মাছ কিনেছি। তখন দেখতাম পোন হিসেবে মাছ বিক্রি হত, আজকে হচ্ছে কেজি হিসেবে। তাও দাম অনেক বেশি। ৬ কেজি মাছ কিনেছি ৫ হাজার টাকায়।

কেবি বাজার মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সভাপতি শেখ আবেদ আলী বলেন, শেষ সময়ে সবাই চাচ্ছে মাছ কিনতে, তাই দাম বেশি। জেলে ও ব্যবসায়ীরাও চাচ্ছে তাদের মাছ বিক্রি করে চলে যেতে। তবে কেউ কেউ আরও বেশি দামে বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছে। তবে রাতের আগেই সব বিক্রি হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএস এম রাসেল বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর মধ্য রাত পর্যন্ত সমুদ্র ও নদীতে  ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকবে। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে আমরা প্রচার প্রচারণা চালিয়েছি। অবরোধ কার্যকর করতে দিন-রাত সব সময় আমাদের টহল জোরদার থাকবে। এই সময়ে জেলেদেরকে সরকারি সহায়তাও দেওয়া।#

tn

 

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *