সোম. এপ্রি ২৯, ২০২৪

কৃষি বিভাগ বলছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ কিটনাশক বিক্রি করা অপরাধ। বিষয়টির তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বাগেরহাট প্রতিনিধি,
বাগেরহাটে ডিলারের দেয়া মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ কিটনাশক ব্যবহার করে নষ্ট হয়ে গেছে কৃষকদের শত শত একর আমন ধানের ক্ষেত। বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের হেদায়েতপুর বিলের কৃষকরা এই মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ কিটনাশক ব্যবহার করে কৃষকদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ কিটনাশক বিক্রি করা অপরাধ। বিষয়টির তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ভুক্তভোগী কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কেউবা ব্যাংক থেকে, কেউবা বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আমন ধানের চাষ করেছেন। কারণ এই আমন ধানই তাদের একমাত্র ভরসা। সারা বছরের খাবার ছাড়াও উৎপাদিত ধান বিক্রি করে দায়-দেনাসহ সব ধরনের প্রয়োজন মিটিয়ে থাকেন কৃষকরা। তারা নিজের জমি ছাড়াও বর্গা বা নগদ টাকায় জমি লীজ নিয়ে চাষাবাদ করেছেন। কিন্তু এবছর ডিলারের দেয়া মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ কিটনাশক ব্যবহার করে নষ্ট হয়ে গেছে বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের হেদায়েতপুর গ্রামের কৃষকদের স্বপ্ন। কৃষকরা জানান, বীজতলা থেকে জমিতে চারা লাগানোর পর তারা সন্তানের মত যতœ করে বড় করে তুলেছিলেন ধান ক্ষেত। ফলন আসার আগেরই জমিতে লেদা ও পারলি পোকা আক্রমন করে। ডেমা ইউনিয়নের বিসিআইসি অনুমোদিত সার ডিলার ‘অমিও এন্টারপ্রাইজের’ মালিক আকুঞ্জি করিম হোসেন কাছ থেকে ‘সিনজেনটা’ কোম্পানীর ‘ভিরতাকো’ নামের একটি কিটনাশক ক্রয় করে ব্যবহার করে। কিন্তু দিনের পর দিন এই কিটনাশক ব্যবহার করেও কোন উপকার হয়নি তাদের। চোখের সামনেই শেষ হয়ে গেছে তাদের স্বপ্ন। পরে তারা দেখতে পান এই কিটনাশকের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।
কৃষক গাজী বাবর আলী জানান, তিনি ৭ লাখ টাকা খরচ করে ৬০ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছেন। ফলন খুবই ভাল ছিল। লেদা পোকায় আক্রমন করলে তিনি কাশিমপুর বাজারের করিমের নিকট থেকে ‘ভিরতাকো’ নামের কিটনাশক এসে ব্যবহার করেন। চার বার দিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে প্যাকেটের গায়ে দেখেন ওই কিটনাশকের মেয়াদ নেই। কৃষক লোকমান শেখ জানান, তিনি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে জমি লীজ নিয়ে দুই একর জমিতে আমন চাষ করেছেন। মেয়াদ উত্তীর্ণ কিটনাশকের কারনে সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। কৃষক নজরুল ইসলাম, ইব্রাহিম মোল্লা, শেখ জিল্লুর রহমান জানান, আমন ধানই তাদের একমাত্র ভরসা ছিল। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে জমিতে ধান লাগিয়ে ছিলেন। কিন্তু ডিলার করিমের কাছ থেকে নেয়া মেয়াদ উত্তীর্ণ কিটনাশক তাদের শেষ করে দিয়েছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ কিটনাশক বিক্রেতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন ও তাদের ক্ষতি পুরণ দাবী করেন চাষীরা।
কটনাশক বিক্রয়কারি অমিও এন্টারপ্রাইজে প্রতিষ্ঠানটির মালিক আকুঞ্জি করিম হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন আমি মেয়াদ উত্তীর্ণ কিটনাশক বিক্রি করিনি।
বাগেরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তন্ময় দত্ত জানান, মেয়াদ উত্তীর্ণ কিটনাশক বিক্রি করা অপরাধ। বিষয়টি জানার পরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। কটনাশক ডিলারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।##

mn

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *