বাগেরহাট প্রতিনিধি ।
ঈদের দিনে গৃহবধু মিরা বেগমের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে এলাকাবাসীর তদন্ত দাবী ।
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় কোরবানীর ঈদের দিন স্বামী ও স্বামী পরিবারের সাথে বিরোধের এক পর্যায়ে মিরা বেগম (৪২) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার ঝনঝনিয়া বড়বাড়ি এলাকায় গত রবিবার এ ঘটনা ঘটে। পরের দিন সকালে কাউকে কিছু জানিয়ে ময়না তদন্ত ছাড়াই ওই গৃহবধুর মরদেহ তড়িঘড়ি করে দাফন করার পর এ মৃত্যু নিয়ে জনমনে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে মঙ্গলবার সরেজমিনে ওই এলাকায় গেলে গৃহবধুর মৃত্যু সর্ম্পকে প্রতিবেশি ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার ঝনঝনিয়া বড় বাড়ির বাসিন্দা মোঃ শাহিনুর রহমানের সাথে তার স্ত্রী মিরা বেগমের কোরবানির মাংস বিতরণ ও বাবার বাড়ি বেড়াতে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে ঘটনার দিন আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে কথা কাটাকাটি হয়। পরে শাহিন তার স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এক পর্যায় মিরা বেগম ওই রাতেই বাড়িতে মারা যান। প্রতিবেশিরা জানান এরপর মিরা বেগমকে গলায় দড়ি দিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে শাহিন প্রচার চালায়। পরে লোকজন এসে মিরার ঝুলন্ত মরদেহ নামিয়ে ওই রাতেই রামপাল উপজলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। বিষয়টি থানা পুলিশ কে না জানিয়ে সোমবার সকাল সাড়ে ৭ টায় তড়িঘড়ি করে মরদেহ দাফন করার ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মনে মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। নাম প্রকাশ না করে বেশ কয়েকজন প্রতিবেশি জানান, ঈদের দিন সন্ধ্যায় তাদের মধ্যে কোরবানীর মাংশ বিতরন নিয়ে পারিবারিক দ্বন্ধের সষ্টি হয়। এ নিয়ে শাহিন তার স্ত্রী মিরাকে মারধর করেন। এতে তার মৃত্যু হয়। শাহিন মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে গলায় রশি দিয়ে মিরাকে ঝুলিয়ে রাখেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। কারন প্রতিবেশিরা অধিকাংশরাই দাফনের বিষয়টি জানেন না বল জানান। তারা আরো জানান শাহিনের তড়িঘড়ি করে দাফনের ব্যস্ততা ও তার আচার আচরণ দেখে আমাদের মনে সন্দেহ হয়েছে তার স্ত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত হলে রহস্য উদঘাটন হবে বলে স্থানীয়রা দাবী করেন। এ বিষয় শাহিনুর রহমানের কাছ জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার স্ত্রী অসুস্থ ছিল। অসুস্থ হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। আমার শশুর বাড়ির লোকজনের পীড়াপীড়িতে তড়িঘড়ি মাটি দেয়া হয়েছে। রামপাল থানার ওসি মোঃ সামসুদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিভিন্নভাবে তথ্য পাওয়ার পর আমি শাহীনুর রহমান ও তার ছোট ছেলে আলিফ কে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করি। আলিফ জানায় মানুষের সাথে আমাদের শত্রুতার কারণে লোকজনে গুজব ছড়িয়েছে। তবে মিরা বেগমের স্বজনরা তার মৃত্যু নিয়ে কোন কথা বলতে চাননি। প্রসঙ্গতঃ এর আগে শাহিনুরের প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর খুলনার দিঘলিয়া উপজলার দেয়াড়া গ্রামের মিরা বেগমকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসাবে বিয়ে করেন। #az