বৃহঃ. এপ্রি ১৮, ২০২৪

বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ

সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬ হাজারের উপরে, মৃত্যু ১৩৮ জনের তিন মাস পর বাগেরহাটে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার নামল ৯ শতাংশে, লাগাম টেনে রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান স্বাস্থ্য বিভাগের।
বাগেরহাটে ধীরে ধীরে করোনার সংক্রমণের হার ও ভর্তি রোগীর চাপ কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় করোনার সংক্রমণের হার নেমেছে ৯ শতাংশে। গত ২৪ ঘন্টায় ৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় মাত্র ৬ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। যা গত তিন মাসের তুলনায় সর্বনিন্ম। আর কোভিড হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৩ জন। তাই সংক্রমণের লাগাম ধরে রাখতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
বাগেরহাটে প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনায় ১৩৮ জনের হয়েছে। এছাড়াও উপসর্গ নিয়ে আর অন্তত শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮০৬ জনে। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৪৬৮ জন।
দক্ষিণের জেলা বাগেরহাটে গত ৩০ মে থেকে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। প্রথমে মোংলা উপজেলাতে সংক্রমণ রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়তে শুরু করে। পরে আশেপাশের উপজেলাগুলোতেও তা ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময়ে আক্রান্ত রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খায় স্বাস্থ্য বিভাগ। বাগেরহাট হয়ে ওঠে করোনা হট জোন। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেও সংক্রমণের লাগাম ধরে রাখা যাচ্ছিল না।
বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর গত ৩/৪ মাস ধরে বাগেরহাটে করোনা পরিস্থিতি খুব খারাপ অবস্থায় ছিল। সংক্রমণের হার ছিল ৭০ শতাংশ। গত এক মাস ধরে সংক্রমণের হার কমতে থাকে। আজ সংক্রমণের হার সবচেয়ে কম ৯ শতাংশ। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরও চাপ অনেক কমে এসেছে। ৫০ শয্যার বিপরীতে ৭৮/৮০ জন রোগী ভর্তি থাকছিল। এখন তা নেমে ১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের ফলে সংক্রমণের হার নিন্মমুখি হয়েছে। সংক্রমণের হার নিচের দিকে রাখতে হলে আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তাই সংক্রমণের লাগাম ধরে রাখতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
বাগেরহাট কোভিড হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. মিরাজুল করিম বলেন, করোনা সংক্রমণ শুরু পর রোগীদের চিকিৎসা দিতে ৫০ শয্যার একটি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল চালু করা হয়। গত মে মাসের শেষ দিকে রোগীর চাপ অস্বাভাবিকহারে বাড়তে শুরু করলে চিকিৎসকরা তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছিল। বাগেরহাটে দ্বিতীয় ঢেউয়ে মোট ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর বাইরে উপসর্গ নিয়েও বেশকিছু মানুষের মৃত্যু হয়। এখানে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের অধিকাংশই ছিল টিকার বাইরে এবং এরা শেষ সময়ে এসেছেন চিকিৎসা নিতে। সময়মত হাসপাতালে না আসায় এসব রোগীদের মৃত্যু হয়। বাগেরহাট কোভিড হাসপাতালটি ৫০ শয্যার। ৫০ শয্যার বিপরীতে ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী ভর্তি করতে হচ্ছিল। চলতি মাসে সেই চাপ অনেকটাই কমে এসেছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত মাত্র ১৩ জন রোগী এখানে ভর্তি আছেন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *