শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪

 

বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ

পারিবারিক দ্বন্দের শালিস বৈঠকে হামলা-ভাংচুর, পুলিশ সদস্য স্বামী-শশুরসহ আটক চার।

বাগেরহাট সদর উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে গ্রাম আদালতের শালিস বৈঠকে হামলা ও ভাংচুর এর ঘটনা ঘটেছে। রোববার বিকেলে সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় ঠেকাতে এসে গ্রামপুলিশসহ অন্তত চারজন আহত হয়। ঘটনার সাথে জড়িত পুলিশ কনস্টেবল ফয়সাল আহম্মেদ নাদিম, তার বাবা আর্মড পুলিশের এস আই ফারুক আহম্মেদ ও নাদিমের দুই ভাই মেহেদী ও ইব্রাহীমকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

কনস্টেবল ফয়সাল আহম্মেদ নাদিম ঢাকার মিরপুর স্টাফ কলেজে কর্মরত এবং তার বাবা ফারুক আহম্মেদ খুলনার খানজাহান আলী সেতু টোল প্লাজায় আর্মড পুলিশের এস আই হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। মেহেদী ও ইব্রাহীম দুজন-ই শিক্ষার্থী।

কাড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিতুর রহমান পল্টন জানান, দুই বছর আগে কাড়াপাড়া গ্রামের মানিক শিকদারের মেয়ে হুমায়রা জান্নাতের সাথে একই এলাকার ফারুক আহম্মেদের ছেলে পুলিশ কনস্টেবল ফয়সাল আহম্মেদ নাদিমের বিয়ে হয়। সম্প্রতি পারিবারিক কলহের জেরে নাদিমের মা ইউনিয়নের পরিষদে বিরোধ মিমাংসার জন্য আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে দুই পক্ষকে নোটিশের মাধ্যমে রোববার গ্রাম্য আদালতের দিন ধার্য করা হয়। সেই অনুযায়ী এদিন বিকেলে শালিস বৈঠকের এক পর্যায়ে নাদিম উত্তেজিত হয়ে তার স্ত্রীর দিকে তেড়ে যায়। এসময় বাধা দিলে নাদিম ও তার ভাইয়েরা মারধর শুরু করে। এতে গ্রাম পুলিশের দফাদার লুতফর রহমান, গ্রাম পুলিশ নয়ন ও ফরহাদ এবং স্থানীয় জাহাঙ্গীর আহত হন। এর মধ্যে দফাদার লুতফর এর মাথা ফেটে যাওয়ায় তাকে উন্নত চিকিতসার জন্য খুলনায় প্রেরণ করা হয়েছে।

নাদিমের স্ত্রী হুমায়রা জান্নাত বলেন, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য স্বামী-শাশুড়ি আমার উপর নানাভাবে নির্যাতন করত। একপর্যায়ে টাকা না দেওয়ায় আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। আমার ২২ দিনের শিশু সন্তান রয়েছে। আশা করেছিলাম সন্তান নিয়ে স্বামীর ঘরে সুখে শান্তিতে বসবাস করব। কিন্তু শালিস বৈঠকে আমার পরিবার এমনকি স্থানীয়দের অপমান করেছে তারা।

হুমায়রার বাবা মানিক শিকদার বলেন, বিয়ের পর থেকেই বিশ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য মেয়েকে চাপ প্রয়োগ করত নাদিম ও তার পরিবার। টাকা না দেওয়ায় মেয়ের উপর প্রায় সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত তারা। এমনকি অন্তঃস্বত্তা অবস্থায় মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বর্তমানে তার ২২দিন বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শালিস বৈঠকে এধরনের হামলা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার ছাড়া কিছু নয়। আমি এই ঘটনা সুষ্ঠ এবং কঠোর বিচার দাবি করি।

এদিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আগে ফয়সাল আহম্মেদ নাদিম বলেন, আমরা হামলা করিনি, উপরন্তু  মার খেয়েছি। আবার ঝামেলায়ও পড়েছি।

বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে ইউনিয়ন পরিষদে শালিসের মধ্যে হামলার ঘটনায় আমরা চারজনকে হেফাজতে নিয়েছি। এই ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

tn

 

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *