বৃহঃ. মার্চ ২৮, ২০২৪

বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ

শরণখোলায় খালের ভাঙ্গা ব্রিজটি ১মাসেও অপসারণ করেনি কর্তৃপক্ষ,দুর্ভোগে ব্যবসায়ীরা,
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা খালের ব্রিজটি ভেঙে পড়ে আছে প্রায় একমাস। ব্রিজটি অপসারণ না করায় বন্ধ রয়েছে খালটির একাংশের যোগাযোগ। পণ্যবাহী কোনো নৌযান চলাচল করতে পারছে না। এতে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে এই খালের ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠা ব্যবসা-বাণিজ্য।
গত ১৭ আগস্ট ভোররাতে উপজেলা সদরের জনগুরুত্বপূর্ণ রায়েন্দা খালের ওপর প্রায় ২৫ বছর আগে ১৯৯৬ সালে নির্মিত লোহার পিলার ও আরসিসি ঢালাইয়ের ব্রিজটি হঠাৎ ভেঙে পড়ে। লোহার পিলারগুলো নিচ থেকে ক্ষয় হয়ে যাওয়ায় এক বছর আগেই ব্রিজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে এলজিইডি দপ্তর। পরে পাশে বিকল্প একটি কাঠে পুল নির্মাণ করা হয়। এরপরও রায়েন্দা ও খোন্তাকাটা ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এই পরিত্যক্ত ব্রিজ দিয়েই চলাচল করে আসছিল। বর্তমানে কাঠের পুল দিয়ে এতো মানুষের চলাচলের কারণে সেটিরও এখন নড়বড়ে অবস্থা। এই পুলটিও যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাই দ্রুত এই স্থানে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খালের পশ্চিমাংশে (ভেতর পাশে) গড়ে উঠেছে নদী নির্ভর অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এই অংশে রয়েছে সরকারি খাদ্য গুদাম, একটি বরফ কল, কমপক্ষে ২০টি নির্মাণ সামগ্রীর দোকান এবং অর্ধশতাধিক ইট, বালুর গোলা। ব্রিজটি দীর্ঘদিন ভেঙে পড়ে থাকায় খালের গুরুত্বপূর্ণ অংশটি একেবারেই আটকে আছে। যার ফলে, ব্যবসায়ীক এসব পণ্যসামগ্রী ঠিকমতো আনা-নেওয়া করতে না পারায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মের্সাস মেঘা বরফ কলের মালিক মো. গোলাম মোস্তফা তালুকদার জানান, বর্তমানে ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। ব্রিজটি ভেঙে পড়ে থাকায় পুরো খালটি বন্ধ। তার বরফ কলটিও ভেতরে আটকা পড়েছে। ছোটখাটো দু-একটি মাছ ধরা নৌকা ছাড়া বড় কোনো ফিশিং ট্রলার ঢুকতে পারছে না। এতে বরফ উৎপাদনও বন্ধ হয়ে গেছে। এক মাসে কয়েক লাখ টাকা লোকসানে পড়তে হয়েছে তাকে। শেষ দিকের ইলিশ মৌসুমটাই মাটি হয়ে গেল তার।
নির্মাণ সামগ্রী ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা তালুকদার, জামাল আকন ও হাবিব মুন্সী বলেন, তারা মোকাম থেকে ইট, বালু, সিমেন্ট নৌপথেই আনা-নেওয়া করেন। ব্রিজের কারণে এসব পণ্যের কার্গো ঢুকতে পারছে না। ভাঙা ব্রিজটি দ্রুত অপসারণ করা না হলে তাদের ব্যবসাই বন্ধ হয়ে যাবে।
রায়েন্দা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ব্রিজটি ভেঙে খালটি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে খাদ্য গুদামের ঘাটে বড় কোনো বার্জ আসতে পারছে না।
জানতে চাইলে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাতুনে জান্নাত বলেন, ব্রিজটি অপসারণের দায়িত্ব এলজিইডি দপ্তরের। মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ইতোমধ্যে কয়েকবার মিটিং করে তাদেরকে এটি সরাতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মতিন বলেন, প্রথম দিকে এলজিইডির নিজস্ব খরচে স্থাণীয়দের মাধ্যমে ব্রিজটি ভেঙে সরানো চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে অতিরিক্ত খরচ পড়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তা বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি দ্রুত অপসারণের চেষ্টা চলছে।

mn,rk.

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *