শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪

 প্রতিনিধি বাগেরহাট।
ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত স্থাপনা বিখ্যাত মুসলিম শাসক খানজাহান আলী (রহ) এর বসত ভিটা খনন শুরু করেছে প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলার ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের সুন্দরঘোনা গ্রামে প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তর খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন এই খনন কাজের উদ্বোধন করেন।
এসময়, প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তর খুলনার সহকারী পরিচালক মোঃ গোলাম ফেরদৌস, বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া তাসনিম, ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আখতারুজ্জামান বাচ্চু, বাগেরহাট জাদুঘরের কাস্টডিয়ান মোহাম্মাদ যায়েদ, আল আমীন, প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তরের ফিল্ড অফিসার মোসাঃ আইরীন পারভীন, মোঃ হাসানুজ্জামানসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তরের ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের এই খনন কাজে সুলতানি আমলে নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনা, ভূমির শ্রেনি বিন্যাস, স্থাপনা তৈরির বিভিন্ন উপকরণ, যাতায়েত পথ, দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন আসবাবপত্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। ৪৫দিন ব্যাপি এই খনন কাজে প্রতœতত্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের ১০জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহন করেছেন। এদের পাশাপশি খনন কাজে দক্ষ শ্রমিকরাও অংশ নিবেন এই খনন কাজে। খনন শেষে প্রাপ্ত ফলাফল সাধারণ মানুষকে জানানো হবে বলে জানিয়েছে প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তর।
প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক লাভভি ইয়াসমিন বলেন, ‘খান জাহানের বসতভিটা হিসেবে সংরক্ষিত এই প্রতœস্থলটিতে বেশ কয়েকবার খনন করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ের খননেপ্রাচীন দেয়াল, মেঝে, পয়োনিষ্কাশন প্রণালির নালা, পোড়ামাটির তৈরি পাইপসহ বিভিন্ন স্থাপত্য নিদর্শন প্রদীপদানি, পোড়ামাটির পুঁতি, লাল, কালো ও ধূসর বর্ণের মৃৎমাত্র, প্লেট, গ্লাস, পিরিচ, নল, জালের গুটি, টাইলস, অলংকৃত ইটসহ বিভিন্ন প্রতœবস্তু পাওয়া গেছে। এবার ২০২২-২৩ অর্থ বছরের খনন শুরু করেছি আমরা। এবারের খননেও আশাকরি গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রতœতত্ত¡ নিদর্শণ পাওয়া যাবে। যা দেশের প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শণ ও পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৮৫ সালে খানজাহান আলী (রহ) এর নির্মিত ষাটগম্বুজ মসজিদসহ ১৭টি স্থাপনাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলার সুন্দরঘোনা এলাকায় অবস্থিত খানজাহান আলী (রহ) এর বসত ভিটা অন্যতম। ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে মাত্র ৩০০ মিটার উত্তরে এই বসত ভিটাটি রয়েছে। ২০০১ সালে এখানে প্রথমবার প্রতœতাত্তি¡ক খনন পরিচালনা করে প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তর। এরপর ২০০৮ থেকে এ পর্যন্ত মোট ১২ বারের খননে ঢিবিটিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন পাওয়া গেছে। যার মধ্যে সাড়ে ৬০০ বছর আগের উলুঘ খান জাহান (হজরত খানজাহান (রহ.) আমলের নানান স্থাপনা ও ইট বিছানো সড়ক ছাড়াও আগে ও পরের বিভিন্ন যুগের স্থাপনা এবং বসতির নিদর্শন রয়েছে। এখানে পাওয়া স্থাপত্য, মৃৎপাত্র, নানা তৈজস ও উপকরণ থেকে ধারণা করা যায়, সেই সময়ে এখানে বসবাসকারীদের একটি উন্নত রুচিবোধ ছিল। নির্মাণশৈলী ও শৈল্পিকতায় তার প্রকাশ পেয়েছে। খান জাহানের বসতভিটা বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যতম এক নিদর্শন, যার পাশে এখন টিকে আছে প্রায় সাড়ে ৬০০ বছর আগে নির্মিত ইটের তৈরি প্রাচীন রাস্তা। খান জাহানের বসতভিটা ছাড়াও স্থানটি মধ্যযুগের অন্যতম টাঁকশাল নগরী খলিফাতাবাদ শহরের অংশ হিসেবে পরিচিত।#im

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *