উত্তাল সংবাদ ডেস্ক
বাগেরহাটে পতিত জমি হয়েছে সবজির খামার লাভবান হচ্ছে চাষিরা।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা থাকবে না এই আদেশের বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।করোনাকালে উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। ফকিরহাটের লখপুর এলাকার মাঠ জুড়ে এখন সবুজের সমারহ। কিছুদিন আগেও এই জায়গাগুলো ছিল পতিত জমি। ফকিরহাট উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যে কৃষি উৎপাদন স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা মেটাতে বাগেরহাটের ফকিরহাটে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বিনামূল্যে চাষিদের বীজ ও সার দেওয়ার পাশাপাশি কৃষকদের করোনাকে ভয় করে ঘরে বসে না থেকে সামাজিক দূরত্ব। বজায় রেখে মাঠে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে চাষিরা পতিত জমিতেও সবজি খামার গড়ে তোলেন। তাদের খামারে উন্নত জাতের লাউ, বরবটি, শসা, বেগুনসহ নানা ধরনের সবজি উৎপাদন হচ্ছে। আর এসব সবজির বাজারমূল্য ভালো হওয়ায় লাভবান হচ্ছে চাষিরা।ফকিরহাটপর লখপুর এলাকার আল আমিন শেখ বলেন, করোনাকালে এক প্রকার বেকার সময় কাটছিল। এসময় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে রাস্তার পাশে পতিত জমিতে চাষাবাদ করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। দেওয়া হয় কিছু বীজ। বিনামূল্যে পাওয়া এসব বীজ তিনি লাগিয়েছেন। দিয়েছেন জৈব সার। এখন ফসল বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন তিনি।
একই এলাকার কৃষক রোকন মোল্লা বলেন, তিনি ঘেরের পাড়ে বিভিন্ন প্রকারের সবজির চাষ করতেন। করোনার কারণে সেটাও এবছর অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। এক পর্যায়ে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস তাকে উন্নত জাতের লাউ চাষ করার পরামর্শ দেন। এখন একদিন পর পর ৫০-৬০টি লাউ কাটতে পারছেন তিনি। আর প্রতিটি লাউ ঘেরের পাড় থেকেই ২৫-৩০ টাকা দরে পাইকারি নিয়ে যাচ্ছে। এই লাউ চাষ করে তার সংসারের অভাব দূর হয়েছে।শারমিন বেগম বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী দুইজনই সারাদিন মাঠে কাজ করে সংসার চালাই। করোনার কারনে আমরা হতাশায় ছিলাম, কীভাবে সংসার চলবে? কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে উচ্চ ফলনশীল জাতের সীমের বীজ লাগিয়েছিলাম। কোনও প্রকার রাসায়নিক সার ছাড়াই বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও ভালো। তাই আমাদের মনে সুখ আর মুখে এখন হাসি। কৃষক উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, রাস্তার পাশে পতিত জমিতে তিনি একবছর মানকচু ও মেটে আলু লাগিয়েছেন। যে জমিতে কোনও দিন কোনও ফসল হয়নি ফসলের আশাও কেউ করেনি সেই জমিতে আজ ফসল হয়েছে। এই ফসল উঠলে অনেক আয় হবে।
স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস বলেন , প্রধানমন্ত্রীর এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা থাকবে না এই আদেশের বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। করোনাকালীন সময়ে চাষীদের পাশে থেকেই তাদের সহায়তার পাশাপাশি পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এসব সবজি বাগান নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের উৎস বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।