নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সংযোগ বিচ্ছিন্ন, পৌরসভার কাছেই বকেয়া সাড়ে চার কোটি টাকা বাগেরহাটের পাঁচ সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ওজোপডিকো’র বকেয়া বিদ্যুৎ বিল সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা, পাওনা আদায়ে নোটিশ।
বাগেরহাট পৌরসভাসহ সরকারি ও শায়ত্বশাসিত অন্তত পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এরমধ্যে সাড়ে চার কোটি টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে বাগেরহাট পৌরসভার কাছে। বকেয়া এই বিদ্যুৎ বিল আদায়ে কঠোর অবস্থান নিতে শুরু করেছে ওজোপাডিকো কর্তৃপক্ষ। পাওনা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় ইতিমধ্যে তারা পৌরসভার মালিকানাধীন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে সরকারি এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ম অনুযায়ি বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে তাদেরও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওজোপাডিকো।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন তারা নিয়ম মেনে সরকারি বরাদ্দের টাকা থেকে সমন্বয় করে আগের বকেয়া টাকা কিছু কিছু করে পরিশোধ চলমান রয়েছে।
বাগেরহাট পৌরসভা, জেলা পুলিশ অফিস, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ, সরকারি পিসি কলেজ, কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল উল্লেখযোগ্য।
বাগেরহাট পৌরসভার প্রধান নির্বাহী ও সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট পৌরসভার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এই পৌরসভার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয় রাজস্ব আয়ের তহবিল থেকে। ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ফান্ড থেকে যে উপার্জন হয় তা দিয়ে পৌরসভার কর্মচারিদের বেতন ভাতাসহ অন্যান্য খরচ রাজস্ব আয় থেকে ব্যয় মেটানো হয়। আগামী জুনে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করে ওজোপাডিকো’র বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার চেষ্টা করা হবে। ওজোপাডিকো’র বাগেরহাট পৌরসভার কাছে যে পরিমান বিদ্যুৎ বিল পাওনা আছে তা কিন্তু প্রতি বছর কিছুকিছু করে পরিশোধ করা হচ্ছে। যেহেতু দীর্ঘ বছরের বকেয়া যার জন্য সব টাকা এক সঙ্গে পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী জুনে বকেয়া পাওনা পরিশোধের চেষ্টা থাকবে।
পুলিশ বিভাগের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পাওনার বিষয়ে বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বলেন, এই বিলকে বকেয়া বলা সমীচিন হবে না। এইটা চলমান একটি প্রক্রিয়া, একটা সিস্টেমের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সকল বিল পরিশোধ করা হয়ে থাকে। বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে এই বিল যথা নিয়মে পরিশোধ করা হবে।
ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) বাগেরহাট কার্যালয়ের সহকারি প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) সাইদুর রহমান বলেন, ওজোপাডিকো’র বাগেরহাট পৌরসভার কাছেই বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আছে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। বাগেরহাট পৌরসভার নামে মোট ১৮টি মিটার রয়েছে। এই ১৮টি মিটারের বিপরীতে এই বিপুল পরিমান টাকা বকেয়া হয়েছে। এছাড়া পুলিশ বিভাগের কাছে ২৫ লাখ টাকা, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের কাছে সাড়ে সাত লাখ টাকা, সরকারি পিসি কলেজের কাছে তিন লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। সরকারি, শায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে সব মিলিয়ে ওজোপাডিকো’র পাওনা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা। এরমধ্যে বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডের একটি মিটার পৌরসভার মেয়রের নামে রয়েছে। ওই মিটারের বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় ইতিমধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।
এই বকেয়া টাকা আদায়ে এসব প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হচ্ছে। বকেয়া টাকা পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান চলমান রয়েছে। এসব বকেয়া আট থেকে দশ বছর আগের। তারা নিয়মিত যে বিদ্যুৎ বিল তা পরিশোধ করছে ঠিকই কিন্তু পেছনের বকেয়া টাকা পরিশোধের চেষ্টা করছে না। আগামী জুন মাসের মধ্যে সরকারি এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ম অনুযায়ি বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে তাদেরও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওজোপাডিকো’র এই কর্মকর্তা।ap