বৃহঃ. এপ্রি ২৫, ২০২৪

আমনের সুবাতাস দক্ষিণে,

বরিশাল জেলায় বিশাল বিশাল ফসলের মাঠজুড়ে কাঁচা-পাকা আমন ধানের মৌ-মৌ গন্ধ, বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক ও মনে বেজায় আনন্দ। যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই দেখা যায় মাঠ ভরা আমন ধানের সমারোহ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর উফশী ও স্থানীয় সোনালী ফসলের বাম্পার ফলনে প্রান্তিক কৃষকদের চোখে মুখে আনন্দের বন্যা। ধান কাটার মৌসুম শুরু না হলেও কৃষকদের আগাম প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে আমন ধান কাটা নিয়ে। বাঙালী’র সেই চিরচেনা রুপ নবান্ন উৎসব ও আমন ধানের পিঠায়। আর সেই আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষাণ- কৃষানীর মুখে হাসি।

চলতি বছর জেলায় মোট ১ লাখ ২৪ হাজার ৬’শ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এখানে আবাদ হয়েছে সর্বমোট ১ লাখ ২৪ হাজার ৬’শ ৮৫ হেক্টর। এরমধ্যে উফশী ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯ হাজার ৫’শ ৫০ হেক্টর এবং আবাদ হয়েছে ৫০ হাজার ১’শ ৫০ হেক্টর ও স্থানীয় ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৫ হাজার ১’শ হেক্টর এবং আবাদ হয়েছে ৭৪ হাজার ৫’শ ৩৫ হেক্টর জমিতে চাষা বাদ করা হয়েছে। জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার প্রান্তিক কৃষক মো. রবিউল, মো. শামিম ও মানিক লাল জানান, চলতি বছর তাদের জমিতে আমন ধানের ফলন ভাল হয়েছে। তবে ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে তারা চিন্তিত।

নতুন ধান উঠলে, ধানের দাম কমে না যায় এমন শংঙ্কা এখন তাদের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে। কৃষকারা বেশ সচেতন ও কৃষি বিভাগের পরামর্শের কারনে ধানে পোকার আক্রমণ ছিলো কম। বর্ষা মৌসুমে বেশী বৃষ্টির কারনে পর্যাপ্ত পানি পাওয়ায় সব মিলিয়ে সব কিছু অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

এবিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাকেরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুছা ঈবনে সাইদ বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠজুড়ে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে তার প্রধান কারণ হচ্ছে কৃষকদের সচেতনতা ও কৃষি বিভাগের সঠিক সময় উপযোগী পরামর্শগুলো যথাযথ ভাবে কাজে লাগানো। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উফশী ও স্থানীয় ধানের ফলন হয়েছে অনেক বেশী। সব মিলিয়ে চলতি বছর আমনের মৌসুমে বাম্পার ফলনে কৃষকদের চোখে-মুখে আনন্দের বন্যা।

এবিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাহিমা হক বলেন, চলতি আমন মৌসুমে এখানে ধানের বাম্পার ফলন । অল্প কয়েক দিনের মধ্যে ধান কাটতে ব্যাস্ত হয়ে পড়বে স্থানীয় কৃষকরা। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তাওফিকুল আলম জানান, মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের তদারকি ও কৃষকদের আগ্রহে চলতি আমনের মৌসুমে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ফলন বেশী হয়েছে। সে কারনে চাষীতে মুখে হাসির ঝিলিক।

অন্যান্য মৌসুমের মত চলতি মৌসুমেও কৃষকদের মাঝে বিনামুল্যে সার, বীজ ও অন্যান্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আলাপকালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক আফতাব উদ্দীন বলেন, গত মৌসুমে কৃষকরা ন্যয্যমুল্য পাওয়ায়, চলতি মৌসুমে কৃষকরা আমন ধান চাষে আগ্রহী হয়েছেন। আমাদের আশা এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী ধান উৎপাদন হবে। এবারে আমন মৌসুমে ক্ষেতে তেমন কোন রোগ বালাইয়ের প্রভাব দেখছিনা। ধানের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, আল্লাহ রহমত করলে কৃষকরা এবার অত্যন্ত লাভবান হবে।#

an.bg

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *