শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪

মাল্টাচাষে আগ্রহী হচ্ছেন বগুড়ার শিবগঞ্জের কৃষকরা,

উত্তাল সংবাদ ডেস্কঃ

 

মাল্টাচাষে আগ্রহী হচ্ছেন বগুড়ার শিবগঞ্জের কৃষকরা। চাষ পদ্ধতি সহজ, উৎপাদন খরচ কম, বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় মাল্টাচাষে আগ্রহী তাঁরা। এ অঞ্চলের চাষিদের কাছে মাল্টা চাষ নতুন হলেও তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ, উপকরণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস।

 

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, এ অঞ্চলে বর্তমানে সাড়ে ১৫ হেক্টর জমিতে মাল্টার চাষ হচ্ছে। লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৩শ’ টি বাগানে কৃষকরা বারি ১- বারি-২, ভিয়েতনাম ও আফ্রিকান জাতের মাল্টা চাষ করছেন। তবে ফলন বেশি হওয়ায় বারি মাল্ট্রা-১ এর চাষ বেশি হচ্ছে এ এলাকায়।

প্রতি বছরের ফালগুন মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত সময়ে ফুল আসে মাল্টার গাছে। আর ফল সংগ্রহের উপযোগী হয় ভাদ্র আশ্বিণ মাসে। প্রতি বিঘা জমিতে ১০০ থেকে ১২০টি মাল্টা চারা রোপণ করে একটানা ২০ বছর পর্যন্ত চাষ করা যায়। প্রতিটি গাছ থেকে প্রথম বছর ১০ থেকে ২০ কেজি হারে ফল পাওয়া যায় এবং দ্বিতীয় বছর থেকে ত্রিশ কেজির বেশি ফল সংগ্রহ করা সম্ভব। চারা রোপণের দুই বছর পর মাল্টার গাছ থেকে পুরোদমে ফল পাওয়া যায়।

উপজেলার উথলী গ্রামের মাল্টাচাষি সহিদ মিয়া বলেন , আমি সাড়ে তিন বছর যাবৎ মাল্টা চাষ করছি। বর্তমানে ৭৫ শতক জমিতে ৩০০ টি চারা আছে। এবছর আফ্রিকান জাতের আরো ৮০ টি চারা নতুন করে রোপন করেছি। শুরুতে জমি ঘিরেনি দেয়াতে আমার কিছু অতিরিক্ত খরচ হয়েছে। প্রথমবার উৎপাদন একটু কম হলেও তাঁর পরেরবার মোটামুটি ভালো উৎপাদন হয়েছে। এবারের ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। আমি আশাকরছি, বিক্রি শেষে সব ব্যায় বাদ দিয়ে আমার ৫ লক্ষ টাকা লাভ থাকবে।

 

ধোন্দাকোলা এলাকার মাল্টাচাষি বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন বলেন, মাল্টা বাগানে কোন লোকসান নেই। তেমন কোন খরচও নেই। ঠিকমতো পরিচর্যা করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

দেউলী ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের মাল্টাচাষি আল মামুন জানান, মাল্টার ফসল করতে হলে প্রথমে কিছুটা খরচ হয়। পরে পরিচর্যা ছাড়া অন্য কোন খরচ নাই। মাল্টার চারা সঠিক পদ্ধিতে বেড়ে উঠলে প্রতি গাছ থেকে ৩০ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। সেই হিসেবে প্রতি পূর্ণবয়সের গাছ থেকে প্রায় চার হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। যা অন্য কোন ফসল থেকে পাওয়া যায়না।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাশেদুন্নবী বলেন, কৃষি অফিসের তত্বাবধানে আমরা নিয়মিত চাষিদের সাথে যোগাযোগ করে মাল্টা চাষ সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া মাল্টা চাষের আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে তাঁদের ধারনা দিচ্ছি।

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আল মুজাহিদ সরকার জানান, শিবগঞ্জের মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী। বাজারে ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ এই মাল্টা ফলের চাহিদা ব্যাপক। চাষ পদ্ধতি সহজ ও লাভজনক হওয়ায় জেলার অনেক কৃষক মাল্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ,ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর ৯০ থেকে ১২০ টি মাল্টা বাগান করার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব বাগানের চাষিদেরকে চারা,সার,স্প্রে মেশিনসহ বিভিন্ন উপকরণ আমরা বিনামূল্যে দিয়ে থাকি।

an.bg

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *