বৃহঃ. মার্চ ২৮, ২০২৪

 বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
গেল একমাস ধরে বাগেরহাটে হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রন্ত রোগীর সংখ্যা।প্রতিদিনই আসছে মৃত্যুর খবর। সংক্রমনের হার ছাড়িয়েছে ৪৫ শতাংশের উপরে। জেলার মোংলা এই হার রয়েছে ৭০শতাংশের উপরে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক স্থগিত হওয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বিাচনের তারিখ ঘোষণায় উদ্বেগ প্র্রকাশ করেছেন বাগেরহাটের সচেতন মহল।সাধারণ মানুষও আতঙ্কিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে।২ জুন নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষনার পরে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ভোটারদের বাড়ি-বাড়ি যাওয়া শুরু করেছেন।সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্বয়ং সিভিল সার্জনও করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বাগেরেহাট জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানাযায়, বাগেরহাট জেলার ৯ টি উপজেলার ৭৫টি ইউনিয়নের মধ্যে আগামী ২১ জুন ৭০টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হবে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ করোনা শনাক্ত হওয়া উপজেলা মোংলাও রয়েছে।মোংলার ৬টি ইউনিয়নে ৭৮টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে রবিবারের (০৬ জুন)রিপোর্ট অনুযায়ী গেল ২৪ ঘন্টায় বাগেরহাট জেলায় নতুন করে আরও ৫৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন একজন।এই নিয়ে বাগেরহাট জেলায় ১ হাজার ৭৫২ জনের করোনা শানাক্ত হল। মারা গেছে ৪৫ জন।বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন দেড় শতাধিক রোগী।এই পরিস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে করোনা সংক্রোমন বৃদ্ধির উপযাচক হিসেবে দেখছেন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, করোনা সংক্রমনের কারণে স্কুল কলেজ বন্ধ। সিমীত করা হয়েছে ধর্মীয় ও পারিবারিক আচার অনুষ্ঠান।এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন দিয়ে সাধারণ মানুষকে করোনা সংক্রমনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাগেরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ফররুখ আহমেদ জুয়েল বলেন, নির্বাচনের জন্য সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকতে পারে।তবে সেটা মানুষকে বিপদে ফেলে নয়।যে পরিস্থিতিতে সারাদেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল, বর্তমানে বাগেরহাটে তার থেকে অনেক বেশি খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে। এই অবস্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াভহ রুপ নিতে পারে।করোনা সংক্রমনের উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন করাটা অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত হবে। নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে বাগেরহাট জেলার নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানাই।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), বাগেরহাটের সভাপতি অধ্যাপক চৌধুরী আব্দুর রব বলেন, করোনা সংক্রমনের হার যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে জেলায় লকডাউন ঘোষনা করা উচিত। বাগেরহাটে সংক্রমন ও মৃত্যু হারের সাথে নির্বাচনটা খুবই বেমানান।নির্বাচন আসলে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ভোটের স্বার্থে মানুষের বাড়ি বাড়ি যাবে। তারা নির্বাচনী কার্যক্রম চালাবে এটাই স্বাভাবিক।সে পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চত করা কোনভাবেই সম্ভব হবে না।বাগেরহাটের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এই এলাকার নির্বাচনের বিষয়ে পুনঃবিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, গত দশদিন যাবত বাগেরহাটে করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে মোংলা ও মোরেলগঞ্জে। সদরেও সংক্রমনের হার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। মোংলায় ৭০ শতাংশ এবং জেলায় সংক্রমনের হার ৪৫ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনের ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা অনুয়ায়ী ২১ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটা যেহেতু স্থানীয় সরকারের নির্বাচন। সেখানে নির্বাচনী কাজে জনগণের একটা উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট হবে। যার ফলে করোনা সংক্রমনের আশঙ্কা বেড়ে যাবে।
বাগেরেহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে করোনা সংক্রমনের হার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই শঙ্কার বিষয়টি নির্বাচন কমিশন ও উর্দ্ধোতণ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের সিদ্ধান্ত পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *