শুক্র. এপ্রি ১৯, ২০২৪

প্রতিনিধি বাগেরহাট।

বাগেরহাটের রামপালের ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হত্যা মামলায় ১৭ জন অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল,
বাগরহাটের রামপাল উপজেলার বহুল আলোচিত  ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা খাঁজা মঈন উদ্দিন আক্তার হত্যা মামলায় ১৭ জন কে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেছে তদন্ত সংস্থা সিআইডি। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত ২টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাটের সিআইডি ইন্সপেক্টর শাহানা আফরোজ খাঁন চৌধুরী ২০ জুলাই বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। মামলার সংক্ষিপ্ত বিবারন ও অভিযোগ পত্র মতে রামপাল উপজেলার উজলকুড় ইউনিয়নের সাবেক জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক খাঁজা মঈন উদ্দিন আক্তার কে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় উপজেলার ভরসাপুর বাসস্ট্যান্ড বাজারের কমল কুমার বালার দোকানের সামনে বোমা হামলা করে তাকে হত্যা করা হয়।
নিহত চেয়ারম্যান খাঁজা মইন উদ্দিন আক্তার উপজেলার বামনডহর গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মৃত সোবহান শেখের পুত্র। এ ঘটনার পর তার শ্বশুর সাহেব আলী আকুঞ্জী বাদী হয়ে রামপাল থানায় ওই বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারী একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি রামপাল থানার তৎকালীন এসআই তুহিন হাওলাদার এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান। অথচ কিছুদিনের মধ্যেই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলাটি বাগেরহাটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। পিবিআই এর তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গৌতম চক্রবর্তী তদন্তে নেমে মামলার আসামী শিবলু আকুঞ্জীকে আটক করে জেল হাজতে পাঠান। এর মধ্যে পিবিআই এর ওই কর্মকর্তা বদলী হয়ে গেলে পুলিশ পরিদর্শক শেখ শহিদুল ইসলাম তদন্তের দায়িত্ব পান। এরই মধ্যে মামলার অন্যতম আসামী আহাদ শেখ ও আজিম শেখ আদালতে আত্মসমর্পন করেন। জিঞ্জাসাবাদে আহাদ শেখ আদালতে হত্যার দ্বায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। এরপর শহিদুল, খালেকুল ও তানভীর শেখকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে তদন্তে ওই আসামীসহ এজাহার নামীয় আসামি বাবুল কাজীসহ আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করা হয়। পিবিআই ইনস্পেক্টর শেখ শহিদুল ইসলামের মনগড়া অভিযোগ পত্র দাখিল করেন বলে জানান মামলার বাদী ও স্বাক্ষীরা। পরবর্তীতে মামলার বাদী আলহাজ্ব সাহেব আলী আকুঞ্জী ওই অভিযোগ পত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজীর আবেদন করেন। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক নথি পর্যালোচনা করে অধিকতর তদন্তের জন্য চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি বাগেরহাটের সিআইডিকে অধিক তদন্তের নির্দেশ দেন। সিআইডি’র ইনস্পেক্টর শাহানা আফরোজ খান চৌধুরী ২০২১ এর ৩১ ডিসেম্বর এ মামলার তদন্তভার গ্রহন করেন। তদন্তে আসামী আহাদ শেখের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দির সুত্র ধরে আসামী বাবুল কাজী ফয়লা বাজারের অটো রাইস মিলে বসে ওই হত্যার ষড়যন্ত্র করেন বলে তথ্য বেরিয়ে আসে। সিআইডির অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয় আক্তার চেয়ারম্যানের সাথে রাজনৈতিক ও জমি নিয়ে বিরোধ এবং নিহত চেয়ারম্যানের শ্বশুর সাহেব আলীর জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। আসামী বাবুল কাজী আক্তার চেয়ারম্যান কে পথের কাটা মনে করে তাকে দুনিয়া থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন । গত ২০ জুলাই-২০২২ এ মামলার তদন্ত শেষে নৃশংস ওই হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত হিসাবে সিআইডি ইন্সপেক্টর শাহানা আফরোজ বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। চার্জশীট ভুক্তরা হলো মোঃ আহাদ শেখ, এম এ আজিম, বাকি বিল্লাহ ব্যাপারী, বাবুল কাজী ওরফে কাজী আসাফুজ্জামান, শিবলু আকুঞ্জী, শহিদুল ইসলাম মোড়ল, খালিকুল শেখ, দেলোয়ার ফকির, তানভীর হাসান, আশিকুর রহমান আশিক, মিলন আকুঞ্জী, মো. শুকুর ফকির, মো. শাহাজান শেখ, আইয়ুব আলী শেখ, হাওলাদার রিজাউল করিম, মো. শাহিনুর ইসলাম ও মো. আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেছেন। এ মামলার আসামী মল্লিক মিজানুর রহমান মজনু গত ফেব্রুয়ারিতে মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাকে অব্যাহতির জন্য সুপারিশ করা হয়। মামলার বাদী সাহেব আলী আকুন্জী অভিযোগ করে বলেন সিআইডি তদন্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র দিয়েছেন। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। তারা মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করছে। মামলা তুলে না নিলে তার জামাই এর মতো পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকী দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাটের সিআইডি ইন্সপেক্টর শাহানা আফরোজ খান বলেন হত্যার ঘটনায় ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক দুইটি অভিযোগ পত্র বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করে বিচার প্রার্থনা করা হয়েছে। #

az

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *